Thursday 24 November 2016



জিমেই ইতিহাস

G-mail :একটি বিনামূল্যে ওয়েবমেইল, যার সার্ভিস দেয় গুগল। জিমেইল এ POP3 এবং IMAP সুবিধা রয়েছে। ইউ.কে. এবং জার্মানিতে এটি গুগলমেইল নামেই পরিচিত। মূলত জিমেইলের পরীক্ষামূলক সংস্করণ চালু হয় ১লা এপ্রিল ২০০৪ এ বেটা সংস্করণ আকারে এবং সর্বসাধারণের জন্য এটি উন্মুক্ত হয় ৭ই ফেব্রুয়ারি ২০০৭ এ ।পরবর্তীতে ৭ই জুলাই ২০০৯ পরিপূর্ণ সংস্করণ হিসেবে প্রকাশ করা হয়।

বৈশিষ্ট্যবলি :

  • স্পেস : শুরুতে ব্যবহারকারীদের জন্য জিমেইল বিনামূল্যে ১ গিগা বাইট স্পেস দেয়। পরবর্তীতে তা ২ গিগা থেকে ৪ গিগাবাইট করা হয়। বর্তমানে বিনামূল্যে ব্যবহারের জন্য জিমেইল ব্যবহারকারীদের ১০ গিগাবাইট স্পেস দিচ্ছে যা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। এর পাশাপাশি ইচ্ছে করলে জায়গা বাড়ানোর সুযোগও দিয়েছে। এক্ষেত্রে ২৫ গিগাবাইটের জন্য মাসিক ২.৪৯ ডলার,১৬ টেরাবাইট স্পেসের জন্য মাসিক ৭৯৯.৯৯ ইউএস ডলার দিতে হবে। ২০১১ অক্টোবর পর্যন্ত জিমেইলের ব্যবহারকারী ২৬০ মিলিয়ন।২০০৫ সালের ১ এপ্রিল জিমেইলে প্রথম জন্মদিনে গুগল জিমেইলে স্পেস ১ গিগাবাইট করে।
  • জিমেইল ল্যাবস : ২০০৮ সালের ৫ জুন ব্যবহারকারীদের নানা সুবিধা পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহার করার জন্য জিমেইল ল্যাবস সুবিধা চালু করা হয়। এতে নানা ধরনের সুবিধা যুক্ত করা হয় যা ব্যবহারকারীদের ই-মেইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে সাহায্য করে। এখানে ব্যবহারকারীরা ইচ্ছে করলেই ল্যাব চালু আবার বন্ধ করতে পারেন। পাশাপাশি এসব সুবিধার নানা দিকের কথা ডেভলপারদের জানাতেও পারেন। ব্যবহারকারীদের চাওয়া অনুযায়ী জিমেইলের প্রকৌশলীরা এসব সুবিধা পরিবর্তন, মানোউন্নয়ন করে থাকেন।
  • স্প্যাম ফিল্টার :জিমেইলে রয়েছে শক্তিশালী ফিল্টার সুবিধা। এখন পর্যন্ত সকল webmail সার্ভিস provider দের মধ্যে জিমেইল এর সব থেকে ভাল স্পাম ফিল্টার আছে বলে ধারনা করা হয়। এতে ব্যবহারকারীরা যদি কোন ই-মেইলকে স্প্যাম হিসেবে নির্বাচিত করে দেন তা হলে তা স্প্যাম বক্সে চলে যায়। এছাড়া নির্দিষ্ট কোন ব্যবহারকারীর ই-মেইল যদি স্প্যাম নির্বাচন করে দিলে উক্ত ব্যবহারকারীর সবগুলোই ই-মেইলই স্প্যামে চলে যায়। যার ফলে স্প্যাম থেকে সহজে রক্ষা পাওয়া যায়।
  • জিমেইল মোবাইল :জিমেইল মোবাইল গুগলের জিমেইলের ই-মেইল সেবা। ২০০৫ সালের ১৬ ডিসেম্বর জিমেইল মোবাইল সেবা চালু হয় এবং বর্তমানে প্রায় ৪০টি ভাষায় জিমেইল মোবাইল সংস্করণ রয়েছে। এতে সহজে গুগলের নানা সেবার মতো জিমেইলও মোবাইল ফোনে ব্যবহার করা যায়। এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায় স্মার্টফোন কিংবা মোবাইল ফোনে। জিমেইলের মোবাইলের জন্য বিশেষ অ্যাপসটি বেশ ছোট এবং মোবাইলের স্ক্রিনের সাইজ অনুযায়ী তৈরী করা। এতে ব্যবহারকারীরা মোবাইলে ফোনেই ই-মেইল কম্পোজ, পড়া, আর্কাইভ করা, মেইলের রিপ্লাই করা, ফরওয়ার্ড করা, না পড়া মেইলগুলোকে আনরিড করা, স্টার আইকন অ্যাড করা, কাস্টম লেভেল অ্যাড করা, মেইল মুছে ফেলার কাজ করতে পারেন। ২০০৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর অ্যাপলের আইফোন এবং আইপড টাচের জন্য অ্যাপস তৈরী করে। মোবাইল ফোনে জিমেইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে মোবাইলে কিছু প্রয়োজনীয় সুবিধা থাকতে হবে। এগুলো হলো-
*অবশ্যই ইন্টারনেট ব্যবহার উপযোগী এবং ওয়াপ সুবিধার ওয়েব ব্রাউজার থাকতে হবে                 
*অবশ্যই এক্সএইচটিএমএল সমর্থিত হতে হবে
                           * অবশ্যই কুকিস এনাবল সুবিধা থাকতে হবে
                           * অবশ্যই সিকিউর সকেটস লেয়ার (এসএসএল) ট্র্যাফিক সুবিধা থাকতে হবে।
  • আইপ্যডে জিমেইল :২০১০ সালের ৩ এপ্রিল গুগল অ্যাপলের তৈরী আইপ্যাডের জন্য বিশেষ অ্যাপস তৈরী করে।এর ফলে আইপ্যাড ব্যবহারকারীরা সাফারি ব্রাউজার ব্যবহার করে সহজে জিমেইল ব্যবহার করতে পারেন। এতে সাধারণ লেআউটের পাশাপাশি আইএমএপি ক্লায়েন্স লেআউটেও দেখার সুবিধা রয়েছে।
  •  গুগল বাজ :গুগল বাজ গুগলের একটি মাইক্রোব্লগিং সাইট যা শুরু হয় ২০১০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। এ সুবিধাটি জিমেইলে যুক্ত করা হয় যাতে করে ব্যবহারকারীরা জিমেইলের মাধ্যমেই নিজেদের হালানাগাদ করতেপারেন।গুগলবাজ সুবিধাটি বর্তমানে বন্ধ আছে। এর পরিবর্তিত সংস্করণ হিসেবে সম্প্রতি চালু হয়েছে গুগল প্লাস।
  • জিমেইল চ্যাটে গুগল ভয়েস :২০১০ সালের আগষ্ট মাসে গুগল জিমেইলের চ্যাট সুবিধার সাথে কথা বলার সুবিধা যুক্ত করে। শুরুতে এ সেবাটির নাম ছিলো ‌'গুগল ভয়েস ইন জিমেইল' যা পরবর্তীতে 'কল ফোন ইন জিমেইল' করা হয়। তবে বর্তমানে এ সেবাটি গুগল ভিডিও এবং ভিডিও চ্যাট সেবা হিসেবে পরিচিত। এ সেবার মাধ্যমে ২০১১ সালের শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় জিমেইলে ব্যবহারকারীরা নিজেদের মধ্যে জিমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে কথা বলতে পারবেন। জিমেইল অ্যাকাউন্ট ব্যবহারকারীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে অন্যান্য দেশের ব্যবহারকারীদের সাথেও কথা বলতে পারেন। ২০১০ সালের ২৬ আগস্ট পর্যন্ত প্রায় ১ মিলিয়ন ব্যবহারকারী এ সেবা গ্রহণ করেছেন। 
  • অফলাইনে জিমেইল :২০১১ সালের ৩১ আগস্ট জিমেইল ব্লগ অফিসিয়ালী অফলাইন গুগল মেইল চালু করে ক্রোম ওয়েব অ্যাপস হিসেবে যা গুগল ক্রোম ওয়েব স্টোরে পাওয়া যেত। এইচটিএমএল-৫ সমর্থিত এ অ্যাপসটি ট্যাবলেটও ব্যবহার উপযোগী। ২০১১ সালের ১১ এপ্রিল গুগলের কর্মীদের জন্য অফলাইন গুগল ডক এবং গুগল ক্যালেন্ডার চালু করা হয়।
  • জিমেইল সার্চ :জিমেইলে শুরু থেকে সার্চ অপশন ছিলো যা ব্যবহার করে ই-মেইল খোঁজার কাজটি সহজ হয়েছে। ২১ মে ২০১২ থেকে জিমেইলে আরো উন্নত সার্চ ব্যবস্থা যুক্ত করা হয়। এতে ব্যবহারকারীরা যে কোন শব্দ লিখলে তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবহারকারী কিংবা ব্যবহারকারী ইমেইল সাজেশন দেখায়। 
  • ইন্টারফেস :জিমেইলের ইন্টারফেস দেখতে ওয়েবমেইলের মতো যা বর্তমানে প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন ভাবে সাজানো যায়। ল্যাব থেকে ইন্টারফেসের ল্যাবটি চালু করে লম্ব ভাবে, সমতল ভাবে ইন্টারফেস দেখা সম্ভব।
  • ইতিহাস :জিমেইলে তৈরীর আইডিয়া শুরুতে আসে গুগলের সাথে ইন্টারভিউর সময় রাজন শেথের মাথায়। পরবর্তীতে জিমেইল ডেভলপ করেন পাল বোছিট এবং এর অনেক বছর পর এটি সবার সামনে ঘোষনা করা হয়। শুরুর দিকে জিমেইল শুধুমাত্র গুগলের কর্মীদের ব্যবহারের জন্য ছিলো। পরবর্তীতে গুগল ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল সবার মাঝে জিমেইল চালুর ঘোষণা দেয় 
  • ডোমেইন নামের ইতিহাস :গুগলের জিমেইল ডট কম (www.gmail.com) ডোমেইন নামটি আগে ছিলো বিনামূল্যে ইমেইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ঘারফিল্ড ডট কমের (www.Garfield.com)। পরবর্তীতে ডোমেইনটি গুগল নিয়ে নেয়।শুরুর দিকে জিমেইলের ইউআরএল ছিলো http://gmail.google.com/gmail যা ২০০৫ সালের ২২ জুন রিডাইরেক্ট করে http://mail.google.com/mail করা হয়।
  •  নতুন ঠিকানা খুলতে মোবাইল নাম্বর :যুক্তরাষ্ট্র, ইংল্যান্ড, ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে নতুন জিমেইল ঠিকানা খোলার ক্ষেত্রে মোবাইল নাম্বার দিতে হয়। ঠিকানা খোলার পর মোবাইলে একটি নিশ্চিত করণ নাম্বারসহ বার্তা আসে যা দিয়ে নতুন অ্যাকাউন্ট চালুর ক্ষেত্রে দিতে হয়।এ বিষয়ে গুগলের ব্যাখ্যা দিয়ে জানায়-
  • সঠিক ব্যবহারকারীকে সুবিধা দিতেই মোবাইল এসএমএস ভেরিফিকেশন চালু করা হয়েছে। এতে করে স্প্যামারা অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন না আবার এসএমএসের কোড ব্যবহার করে সঠিক ব্যবহারকারী অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবেন।
  • যদি কারো মোবাইল ফোন না থাকে তাহলে যে কোন বন্ধুর মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেও নিশ্চিতকরণ কোড পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে চিন্তার কিছু নেই যে, বন্ধুর নাম্বার আবার ব্যবহারকারীর ই-মেইলের সাথে যুক্ত থাকবে কিনা? এ বিষয়ে গুগলের মতে, গুগল কোন ব্যবহারকারীর নাম্বার সংরক্ষন করে না যদি না ব্যবহারকারী নিজে কোন নাম্বার যুক্ত করেন। আর অ্যাকাউন্ট খোলার সময় যে মোবাইল নাম্বার দেয়া হয় সেটি একবারের জন্যই ব্যবহৃত হয়।

তথ্যসূত্র :

বহিঃসংযোগ :

সংক্ষিপ্ত বিবরণ :

বিজ্ঞাপন
 যোগাযোগ
সফটওয়্যার
 প্ল্যাটফর্ম
 উন্নয়ন সরঞ্জাম
প্রকাশনা
গাণিতিক পরিভাষা

অপ্রচলিত
ব্যক্তি
Categories:

0 মন্তব্য(গুলি):

Post a Comment

Subscribe to RSS Feed Follow me on Twitter!